Thursday 20 June 2013

ল্যাপটপ কেনার আগে দেখে নিন

বর্তমানে ডেস্কটপকে ছাপিয়ে ল্যাপটপ এবং নোটবুক পিসি ব্যবহারের চল একটু বেশী দেখা যাচ্ছে। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, ঘরে-বাইরে সবখানেই দেখা যায় মানুষ ল্যাপটপ ব্যবহার করছে। ইদানিং ল্যাপটপের দাম আগের তুলনায় অনেক কমে যাওয়ায় তুলনামূলক ভাবে ক্রেতার সংখ্যাও বেড়ে গেছে অনেকটা।
অনেকে মনে করতে পারেন ল্যাপটপ এবং নোটবুক দুটোই তো একই জিনিস। আবার অনেকে ভাবেন ছোট আকারের ল্যাপটপগুলোকেই বুঝি নোটবুক বলে। তবে ধারণা দুটিই কিছুটা সত্য। কারণ, নোটবুককে ল্যাপটপ বলা যায়। তবে ল্যাপটপকে নোটবুক বলাটা ঠিক নয়। নোটবুক ল্যাপটপের ছোট ভার্সন হলেও তাদের মাঝে বেশ কিছু তফাত রয়েছে। সে বিষয়ে ধারণা না থাকলে কমপিউটার কেনার সময় বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়।


ল্যাপটপগুলোতে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা দেয়া হয়, যেমন- কার্ড রিডার, টাচ স্ক্রিন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিকগনিশন, ভালোমানের ওয়েবক্যাম, লাইটযুক্ত কীবোর্ড ইত্যাদি। এসব নোটবুকে খুব একটা দেখা যায় না।
ল্যাপটপ কেনার পূর্বে জরুরী কিছু দিক:
আপনি যখন ল্যাপটপ কিংবা নোটবুক কিনতে যাবেন তখন কিছু জরুরী বিষয় অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে। এতে সঠিক মডেলের ল্যাপটপ বেছে নিতে আপনার সুবিধা হবে।
  • সাধারন কাজে- মুভি দেখা, গান শোনা, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা সহ ছোটখাটো কাজের জন্য কম বাজেটের ল্যাপটপ কেনাই যথেষ্ট। তবে মুভি দেখা যদি আপনার নেশা হয়ে থাকে তবে একটু বড় স্ক্রিন (১৫”) দেখে ল্যাপটপ কিনতে পারেন।
  • যারা অফিস বা ব্যক্তিগত কাজে বেশির ভাগ সময় বাহিরে কাজ করেন তাদের জন্য বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ সম্পন্ন ল্যাপটপ কেনাই ভালো হবে। এ জন্য ল্যাপটপ কেনার সময় এটি এক টানা কতটা সময় ব্যাকআপ দিতে সক্ষম তা দেখে নেন। সাধারনত সব ল্যাপটপের ব্যাটারি লিথিয়াম আয়নের হয়ে থাকে এবং যত বেশি সেল(৪টা-১২টা) থাকবে ব্যাটারিতে, ব্যাটারির ব্যাকআপ সময় ততটাই বেশি হবে। বর্তমান ল্যাপটপগুলির ব্যাটারির ব্যাকআপ সময় ৩-৮ ঘণ্টা হয়ে থাকে। কেনার সময় বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করুন আপনার পছন্দের ল্যাপটপটির ব্যাটারি ব্যাকআপ কতক্ষন দিবে!
  • গেম খেলা, ভিডিও এডিটিং বা গ্রাফিক্সের কাজের জন্য উচ্চ গতি সম্পন্ন একটু হাই-কনফিগারেশনের ল্যাপটপ কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এজন্য ল্যাপটপ এর গ্রাফিক্স সক্ষমতা কেমন তা দেখে নেন। এছাড়া প্রসেসরের ক্লক স্পিড( 3.0 GHz) এবং কোন সিরিজের( Core i3,i5,i7 series) অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
  • এছাড়া কেনার সময় ল্যাপটপটির হার্ডডিস্ক, র‍্যাম কত তা দেখে নিবেন। গেম খেলা, ভিডিও এডিটিং বা গ্রাফিক্সের কাজের জন্য কমপক্ষে 4GB DDR3 র‍্যাম নেবার চেষ্টা করবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার হচ্ছে, ল্যাপটপটিতে যে Graphics Memory থাকবে সেটা Shared Memory না কি Dedicated Memory- সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।
  • ল্যাপটপের অন্যতম একটি দিক একে সহজে বহন করা যায়। এ জন্য যে ল্যাপটপটি আপনি কিনছেন তার ওজন কেমন তা দেখে নিতে ভুলবেন না। সাধারণত বর্তমানে বাজারে যে ল্যাপটপ গুলো পাওয়া যাচ্ছে এ গুলোর ওজন ২.১৫ কেজি এর মধ্যেই পাবেন। এরপর ও যদি আরো হালকা ল্যাপটপ পছন্দ করেন এবং বাজেট যাদি ভাল থাকে তাহলে ম্যাকবুক নিয়ে নিতে পারেন। অথবা, স্বল্প বাজেটের মধ্যে নেটবুক,নোটবুক তো আছেই।
  • ল্যাপটপ কেনার সময় দেখে নিন, যে ব্রান্ডের পণ্যটি কিনছেন সেটার Warranty কত মাসের/ বছরের। এছাড়া USB port কতগুলো রয়েছে। এখনকার গুলোয় মূলত USB 3.0 port চলে এসেছে। অনেকগুলোতে USB port এর দুটো (USB-2.0 এবং USB-3.0) ভার্সন-ই সমর্থন করে থাকে।
  • এছাড়া কেনার সময় অবশ্যই ওয়ারেন্টি কার্ড, চার্জার, ব্যাগ ইত্যাদি আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র যা আপনার ল্যাপটপের সঙ্গেই পাচ্ছেন তা বুঝে নিতে ভুলবেন না। এছাড়া সবসময় অনুমোদিত ডিলার, আমদানিকারক, বিশ্বস্ত মাধ্যম বা ব্যক্তির কাছ থেকে ল্যাপটপ কিনুন। আর খেয়াল রাখবেন তারা কতটা সময় এর ভিতরে বিক্রয়ত্তোর সেবা দিতে পারবে। কারন যে কোন সময় ল্যাপটপের সমস্যার কারনে আপনাকে বিক্রেতার নিকট যাওয়া লাগতে পারে। কারন আপনার এর মধ্যে জরুরী কাজ থেকে থাকলে বেশ ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন।
  • পুরনো ল্যাপটপ কেনা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। এরপর ও কিনলে তা ভালভাবে যাচায় বাছায় করে নিবেন।
  • এছাড়া কেনার আগে কমপিউটার সংশ্লিষ্ট কোন অভিজ্ঞ বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতা নিতে পারেন। আর আপনার বাজেটের সাথে মিল রেখে কেমন ল্যাপটপ পেতে পারেন এজন্য ২-১ দিন আগে থেকেই মার্কেট যাচাই বাছাই করে দেখুন। তারপর আপনার পছন্দের ল্যাপটপটি কিনতে পারেন।

No comments:

Post a Comment